টাঙ্গুয়ার হাওরে নৌকা : তথ্য, ভাড়া, ফোন
টাঙ্গুয়ার হাওর বাংলাদেশের তুমুল জনপ্রিয় এবং একেবারেই অন্যরকম একটি পর্যটনস্থল। দেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট হওয়ায় দেশ ছাড়িয়ে এর নাম ছড়িয়ে পড়েছে বাইরেও। যদিও ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি দেখতে অনেকে শীতকালে যান টাঙ্গুয়ার হাওরে—তবু এ সবাই মানেন যে, টাঙ্গুয়া ভ্রমণের আদর্শ সময় হলো বর্ষা। শুধু তো হাওর নয়, এর অদূরে রয়েছে ঘুরে দেখার আরও যেসব জনপ্রিয় স্থান—যেমন: শহীদ সিরাজ লেক (নীলাদ্রি হ্রদ), জাদুকাটা নদী, নদীতীরে বড়গোপ টিলা বা বারেকের টিলা, লাকমা ছড়া, চানপুর ঝরনা, শিমুল বাগান, শাহ্ আরিফীনের মাজার, অদ্বৈত মহাপ্রভুর মন্দির ও হলহলিয়ার রাজবাড়ি—সবই জলমগ্ন বা জললগ্ন। পর্যটকদের চলাচলের একমাত্র বাহন তাই নৌকো। ছোট-বড় অসংখ্য নৌকো পাওয়া যায় ভাড়ায়। স্থানীয় মাঝিদের নৌকোর পাশাপাশি রয়েছে ভ্রমণের বাড়তি সুবিধাসম্পন্ন বড় বড় নৌকোও, যেগুলো বিভিন্ন বহিরাগত ভ্রমণ-সংস্থার।
বিষয়সূচি
টাঙ্গুয়ার হাওরে নৌকাভাড়া কত?
টাঙ্গুয়ার হাওরে দিনদিন ভিড় বেড়েই চলেছে পর্যটকদের। সেই সুযোগে এসব নৌকা-মালিকেরা গড়ে তুলেছে ‘সিন্ডিকেট’। এরা পর্যটকদের থেকে আদায় করছে অতিরিক্ত ভাড়া। বিশেষত বড় নৌকোগুলো, যার কোনো-কোনোটি ভাড়া হাঁকে অনুমেয় পরিমাণের চার-পাঁচ গুণ বেশি। গলাকাটা ভাড়া যাকে বলে। টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণের এটাই একমাত্র বিরক্তিকর দিক। হিসেব করে দেখা গেছে, একটি নৌকায় দু’ রাত একদিনে তেল ও শ্রমিকসহ যেখানে সর্বোচ্চ খরচ পড়ে ৪-৫ হাজার টাকা, সেই জায়গায় নৌকা-মালিকেরা ভাড়া দাবি করেন ২০-২২ হাজার টাকা পর্যন্ত। এই পর্যটক-হয়রানি বন্ধ করার জন্যে স্থানীয় প্রশাসন কিছুদিন আগে ধারণক্ষমতা অনুযায়ী যৌক্তিক নৌকাভাড়া স্থির করে দিয়েছে। নৌকোয় নৌকোয় ভাড়ার চার্ট সেঁটে দিয়েছে।
টাঙ্গুয়ায় নৌকাভাড়া নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক নির্ধারিত টাঙ্গুয়ার হাওরের নৌকাভাড়ার তালিকা থেকে জানা যায়—নৌকাভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে সর্বোচ্চ ২০ জন যাত্রীবাহী ছোট নৌকো ৮-১২ ঘণ্টার জন্যে ৩,০০০ টাকা, এটাই আবার ২ দিন ও ১ রাত বা সর্বোচ্চ ৩২ ঘণ্টার জন্যে ৬ হাজার টাকা এবং ৩ দিন ও ২ রাত বা ন্যূনতম ৫৬ ঘণ্টার জন্যে ৭ হাজার টাকা; সর্বোচ্চ ৩০ জন যাত্রীবাহী নৌকার ৮-১২ ঘণ্টার ভাড়া ৪,৫০০ টাকা, ২ দিন ও ১ রাতের জন্যে ৯ হাজার টাকা এবং ৩ দিন ও ২ রাতের জন্যে ১০ হাজার টাকা; সর্বোচ্চ ৪০ জন যাত্রীধারণক্ষম বড় নৌকার ৮ থেকে ১২ ঘণ্টার ভাড়া ৬ হাজার টাকা, ২ দিন ও ১ রাত বা ন্যূনতম ৩২ ঘণ্টার জন্য ১২ হাজার টাকা এবং ৩ দিন ও ২ রাত বা ভাড়ার সময় হতে ন্যূনতম ৫৬ ঘণ্টার জন্যে নির্ধারিত ভাড়া ১৩ হাজার টাকা।
অতি সম্প্রতি, গত ০৬/০৯/’২১ তারিখে তাহিরপুর ট্রলার মালিক সমিতিও টাঙ্গুয়ার হাওরের নৌকাভাড়ায় একটা শৃঙ্খলা আনবার চেষ্টা করেছে। প্রত্যেকটি নৌকার সক্ষমতা অনুযায়ী তারা ভাড়া পুনঃনির্ধারণ করে দিয়েছে, যা নিচের ছবিতে দেখানো হলো:
আরও পড়ুন: টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণতথ্য
টাঙ্গুয়ার হাওরে নানা ধরণের নৌকো
কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নৌকা-মালিকেরা নির্ধারিত এসব নৌকাভাড়ার তালিকা খুব একটা মানছেন না। নানা কারণ দেখিয়ে তাঁরা ভাড়া হাঁকছেন যার যার ইচ্ছেমতো। কিন্তু যেহেতু নৌকো ছাড়া টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ সম্ভব নয় এবং নৌকো হলে শুধু হাওর নয় বরং হাওরের আশেপাশের সবগুলো পর্যটনকেন্দ্রই আপনি ঘুরে দেখতে পারেন, সেজন্যে আপনার ভ্রমণদলের সদস্যসংখ্যা অনুযায়ী ছোট বা বড় একটি নৌকো আপনাকে ভাড়া করতেই হবে।
নৌকা ভাড়া নেবার সময় কিছু জিনিস খেয়াল রাখুন—যেমন নৌকায় সোলার প্যানেল দিয়ে মোবাইল ফোন চার্জ করার সুবিধা, বাতি, ফ্যান, বাথরুম আছে কি না এবং থাকলে সেটা কেমন। নৌকা ভাড়া করার সময় অবশ্যই ভালোমতো দরদাম করে নিন। একটি নৌকার ভাড়া কত হবে সেটা নির্ভর করে ৩টি বিষয়ের ওপর, সেগুলো হলো—নৌকার ধারণক্ষমতা, সুযোগ-সুবিধা এবং ভ্রমণের মৌসুম।
ছোট দল হলেই সম্ভবত স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন বেশি। ছোট নৌকার মাঝিরা স্থানীয় বাসিন্দা। হাওরের প্রত্যেকটি জায়গা এবং আশেপাশের গ্রামের লোকজন তাদের পরিচিত। হাওরপাড়ের এসব গ্রামের বাসিন্দারা খুবই সহজ-সরল আর অতিথিপরায়ণ। এদের সঙ্গে আপনি খুব সহজেই ভাব জমিয়ে ফেলতে পারবেন। ফলে তারা আপনার ভ্রমণকে সর্বোচ্চ আনন্দ-স্বাচ্ছন্দ্যে ভরিয়ে তুলতে সাহায্য করবে। টাঙ্গুয়ার হাওরে ভাড়া করার জন্যে স্থানীয়দের মালিকানাধীন এরকম শতাধিক ছোট ছোট নৌকো রয়েছে।
তবে যেহেতু টাঙ্গুয়া ভ্রমণে নৌকার বিকল্প নেই এবং বলতে গেলে রাত্রিযাপনেরও একমাত্র ঠাঁই নৌকো, সেজন্যে বেশকিছু বাহারি ও বিলাসবহুল নৌযান মেলে তাহিরপুরে। এসব নৌকায় প্রশস্ত ছাদ, পর্যাপ্ত ঘুমানোর জায়গা এবং সমতল ও উঁচু উভয়প্রকার কমোডের শৌচাগার রয়েছে। আপনি ভাড়া করার জন্যে এরকম ২০টিরও বেশি নৌকা থেকে আপনার চাহিদা ও বাজেট অনুযায়ী যে-কোনো একটি বেছে নিতে পারবেন।
নৌকায় সোলার প্যানেল এবং লাইফ জ্যাকেট না থাকলে আপনি তাহিরপুর বাজার থেকে আইপিএস এবং লাইফ জ্যাকেট ভাড়া নিতে পারেন। যদি আপনি রান্নার ব্যবস্থাসহ নৌকা ভাড়া নেন তাহলে মাঝি একজন বাবুর্চিকে সাথে নেবে অথবা সে নিজেই রান্না করে দেবে। আপনি আগেভাগেই নৌকাওয়ালার সাথে এগুলি আলোচনা করে তারপর ভাড়ার পরিমাণ ঠিক করবেন।
আপনার পর্যটক দলের সদস্যসংখ্যা যদি ৪০ জনের কাছাকাছি হয়, তাহলে আপনি ভাড়া করতে পারেন ইস্পাতের তৈরি সবচেয়ে বড় ও সর্বাধিক বিলাসবহুল একটি নৌকা। ঢাকা ও চট্টগ্রামের কিছু অনলাইন ট্র্যাভেল গ্রুপের পরিচালনায় এমন ছয়টি বড় নৌযান তাহিরপুর উপজেলা সদরের নৌঘাট থেকে পর্যটকদের নিয়ে হাওরে ঘুরতে যায়। নিচে টাঙ্গুয়ার হাওরের কয়েকটি প্রসিদ্ধ নৌকার সুযোগ-সুবিধা ও মোবাইল নম্বর দেয়া হলো।
টাঙ্গুয়ার হাওরের কয়েকটি নৌকা : সুবিধা, ভাড়া ও মোবাইল নম্বর
আবিদা অ্যান্ড তাহা টাঙ্গুয়া প্রমোদতরি
এটি টাঙ্গুয়ার হাওরের পুরনো, বড় ও বিলাসবহুল একটি নৌকা। নৌকাটি ১৫০-২০০ জন পর্যটক বহন করতে পারে। এতে ২২ জনের রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা রয়েছে।
এ নৌকার সুযোগ-সুবিধার মধ্যে রয়েছে আলাদা দু’টি কেবিন, বালিশ, লেপ-তোশক, মশারি, তিনটি টয়লেট (হাই ও লো কমোড), বেসিন, ৩০০ লিটার ধারণক্ষমতার পানির ট্যাংক, পানি তোলার মোটর, সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবাহের জন্যে আইপিএস, ল্যাপটপ ও মোবাইল চার্জের পয়েন্ট, ইঞ্জিনের শব্দদূষণ ঠেকাতে এতে ব্যবহার করা হয়েছে থাই গ্লাস।
এ নৌকোটির ছাদে একসঙ্গে শতাধিক লোক চড়তে পারে এবং যে-কোনো অনুষ্ঠান পরিচালনা করতে পারে। নৌযানটিতে রয়েছে নিজস্ব বাবুর্চি ও রান্নার ব্যবস্থা। এছাড়া পর্যটকেরা ব্যয়বহন সাপেক্ষে খাওয়া-দাওয়া ও গানের আয়োজন করতে পারেন। নৌকোতে রয়েছে লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা।
নৌযানটি এক দিনের ভাড়া ১২ হাজার টাকা। দুই দিন ও এক রাতের জন্যে ভাড়া নিলে লাগবে ১৮ হাজার টাকা। এটি প্রথমদিন সাধারণত তাহিরপুর উপজেলা সদরের বাজার ঘাট বা থানা ঘাট থেকে যাত্রা শুরু করে। টাঙ্গুয়ার হাওরের ওয়াচ টাওয়ারসহ আশেপাশের এলাকা ঘুরে নৌকায় রাত্রিযাপন শেষে নৌকোটি টেকেরঘাট চুনাপাথর খনি প্রকল্প ঘাটে পৌঁছয়। এখান থেকেই শহীদ সিরাজ লেক ও লাকমা ছড়া পায়ে হেঁটে ঘুরে দেখা যায়। তবে চানপুর ঝরনা, বড়গোপ টিলা, যাদুকাটা নদী ও শিমুল বাগান যেতে হলে মোটরবাইক বা অটোতে করে যেতে হবে। রান্না ও গানের জন্যে আলাদা টাকা শোধ করতে হবে।
আবিদা অ্যান্ড তাহা টাঙ্গুয়া প্রমোদতরি ভাড়ার জন্যে যোগাযোগ: ০১৭৩৩-১৭২৪৫৮।
চন্দ্রাবতী
টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণের জন্যে চন্দ্রাবতী বেশ পরিচিত ও বিলাসবহুল একটি নৌকো। এতে উঁচু-নিচু কমোডসহ প্রশস্ত ও পরিচ্ছন্ন শৌচাগার রয়েছে। ১৮ জন ছেলে ও মেয়ের রাত্রিযাপনের জন্যে রয়েছে দু’টি আলাদা কক্ষ। নৌকার ছাদে রয়েছে ৫০ জনের বসার ব্যবস্থা। রয়েছে জেনারেটর, পর্যাপ্ত এলইডি বাল্ব, ফ্ল্যাড লাইট, ইমার্জেন্সি সিগন্যাল লাইট, ফ্যান, মোবাইল ও ক্যামেরা চার্জিং পয়েন্ট, ১৬টি লাইফ জ্যাকেট, ফার্স্ট এইড বক্স, পানি নিষ্কাশন পাম্প, চাঁদোয়া ও শীতল পাটি। রান্নার জন্যে আছে দুই বার্নারের গ্যাসের চুলা, চায়ের ফ্লাস্ক এবং একসঙ্গে ৪০ জনের খাবারের বাসনপত্র।
শুক্র-শনিবার ২ দিনের জন্যে চন্দ্রাবতীর ২২,৫০০ টাকা। শুক্র-শনি ছাড়া অন্য যে-কোনো ২ দিন ১৬,৫০০ টাকা। ১ দিন ও ১ রাতের জন্যে এর ভাড়া হলো ৯,৫০০ টাকা। বাবুর্চি, লাইফ জ্যাকেট, ইঞ্জিন ফুয়েল, রান্নার গ্যাস, জেনারেটর ফুয়েল(৫ লিটার), কিচেন এক্সেসরিজ, ঘাটের টোল ইত্যাদি এই ভাড়ার অন্তর্ভুক্ত।
মোবাইল ফোন: ০১৮৮৪-৭১০৭২৩, ০১৮৬৯-৬৪৯৮১৭।
সিন্দাবাদ তরি
এটিও টাঙ্গুয়ার হাওরের বেশ জনপ্রিয় একটি নৌযান। উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে জেনারেটর, ৬টি ফ্যান, একসঙ্গে ২০টি মোবাইল চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থা। সিন্দাবাদ তরিতে একসঙ্গে সর্বোচ্চ ২৪ জন পর্যটক রাত্রিযাপন করতে পারেন। এতেও আছে বেসিন, হাই কমোড ও লো কমোডের টয়লেট।
২ রাত ও ১ দিনের জন্যে নৌকাটির নির্ধারিত ভাড়া ২৪ হাজার টাকা। এই প্যাকেজে পর্যটকদের খাবার ও বাবুর্চির জন্যে আলাদা করে কোনো টাকা দিতে হবে না। তবে এক দিনের জন্যে ভাড়া করলে গুনতে হবে ১৭ হাজার টাকা। যোগাযোগ (এমরান): ০১৬৭৩-১১১২৩৭।
টাঙ্গুয়া নৌপরিবহন
এই নৌযানটিতেও পর্যটকদের সাধারণ সব সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এতে ২৪ জন পর্যটক রাত্রিযাপন করতে পারেন। ২ দিন ও ১ রাতের জন্যে এর ভাড়া ১৪ থেকে ১৬ হাজার টাকা। ১ দিনের জন্যে ভাড়া পড়বে ৬ হাজার থেকে ৯ হাজার টাকা পর্যন্ত। যোগাযোগ (সামায়ূন কবীর): ০১৭১২১৪৩৭৫৩।
মোহনা নৌপরিবহন
এটিও টাঙ্গুয়ার হাওরের আরেকটি পর্যটন-বান্ধব নৌকো। এর ধারণক্ষমতা ১০০ জনের, আর রাত্রিযাপনে ব্যবস্থা রয়েছে ২০-২৫ জনের। এ নৌকায় ৩টি আইপিএস-চালিত ফ্যান রয়েছে। অন্যান্য নৌকার মতো বেসিন, হাই কমোড, লো-কমোড সুবিধাও আছে। মোহনা পরিবহনের ভাড়া ২ দিন ও ১ রাতের জন্যে ২০ হাজার টাকা, আর ১ দিনের ভাড়া পড়বে ১০ হাজার টাকা। বুকিংয়ের মোবাইল নম্বর (আলম): ০১৭১৪-৩৬৫০১২।
মুক্তামণি নৌপরিবহন
এটা মাঝারি আকারের নৌকা। সুযোগ-সুবিধাও সীমিত। ফ্ল্যাট টয়লেট, হাই কমোড নেই। মোবাইল চার্জের ব্যবস্থাও না। গ্যাস বিল ও বাবুর্চির খরচ নৌকা কর্তৃপক্ষ বহন করে। এই নৌকাতে রাতে ১২ জন পর্যটক থাকতে পারেন। ২ দিন ও ১ রাতের জন্যে এর ভাড়া ১২ হাজার টাকা এবং ১ দিনের ভাড়া ৫ হাজার টাকা। যোগাযোগ মোবাইল (পরান আখঞ্জি): ০১৭১৮-১৬৮৩১৪।
হাওর কিং
টাঙ্গুয়ার হাওরের পর্যটকবাহী কাঠের নৌকা হাওর কিংয়ে রয়েছে ৪০ জনের খাবার খাওয়ার মতো বাসনপত্র এবং ২০ জনের ঘুমাবার ব্যবস্থা। আছে একটি জেনারেটর, ৩টি ফ্যান, ৬টি মোবাইল চার্জের সকেট এবং ১০টি লাইফ জ্যাকেট। রয়েছে হাই ও লো কমোড, মেয়েদের জন্যে আলাদা কেবিন, পানিতে খেলার ফুটবল ও নৌকার ছাদে খেলার জন্যে দাবা-লুডু, বেসিন, জায়নামায, ১৫০ লিটার ধারণক্ষমতার একটি পানির ট্যাংক। ছাদে আছে বসার বেঞ্চ এবং শামিয়ানা।
হাওর কিংয়ের ভাড়া হলো, তাহিরপুর ঘাট থেকে ২ দিন ও ১ রাতের জন্যে শুক্র-শনিবার এবং ছুটির দিন ১৮,০০০ টাকা এবং রবি থেকে বৃহস্পতিবার ১২,০০০ টাকা। ১ দিনের জন্যে এ নৌকো ভাড়া করতে লাগবে ৮,০০০ টাকা (সকাল ৯টা-বিকেল ৫টা)। আর সুনামগঞ্জ সাহেব বাড়ি ঘাট থেকে যাত্রা করলে শুক্র থেকে বৃহস্পতিবার যে-কোনো ২ দিনের ভাড়া ২২,০০০ টাকা (সকাল ৮টা থেকে পরদিন বিকেল ৫টা)।
বুকিংয়ের জন্যে হাওর কিংয়ের মোবাইল নম্বর: ০১৭৭৬-৮৪৮৬৯৪।
টাঙ্গুয়া অভিযাত্রিক
টাঙ্গুয়া অভিযাত্রিকে রয়েছে ৬টি কেবিন, প্রতিটি কেবিন দৈর্ঘ্যে ৭.৫ ফিট এবং উচ্চতা মানুষ-সমান। এতে রয়েছে হাই কমোডসহ ২টি ওয়াশরুম, ২০টি লাইফ জ্যাকেট, ফ্যান ও চার্জিং পয়েন্ট। নৌকাটি যাত্রা শুরু করে সুনামগঞ্জের সাহেব বাড়ি ঘাট থেকে। ১২-১৫ জন যাত্রীর ক্ষেত্রে ২ দিন ও ১ রাতের জন্যে এর শুক্র-শনিবারের ভাড়া ৬,০০০ টাকা এবং রবি থেকে বৃহস্পতিবারে ৪,২০০ টাকা। যাত্রী ১২ জনের কম হলে এই পরিমাণ ভাড়া আলোচনা সাপেক্ষে কমানো যাবে।
বুকিং ও অনান্য তথ্যের জন্যে মোবাইল নম্বর: ০১৭৮৮-৫৫৬৫৫৫।
আরও পড়ুন: ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর ভ্রমণ