ঢাকা টু সিলেট ট্রেনের সময়সূচি ২০২১
Like to read it in English? click here
- রেলপথে ঢাকা টু সিলেট দূরত্ব: ৩১৯ কিমি।
- এ রুটে রয়েছে ৪টি আন্তঃনগর ও ১টি মেইল ট্রেন।
- ভ্রমণকাল: প্রায় ৭ ঘণ্টা।
- ভাড়া: ১ম শ্রেণী চেয়ার ৪২৫ টাকা।
-
পারাবত: ছাড়ে ভোর ০৬:২০-এ এবং পৌঁছায় দুপুর ১টায়। মঙ্গল বন্ধ।
জয়ন্তিকা: ছাড়ে সকাল সোয়া ১১টায়, পৌঁছায় সন্ধ্যে ৭টায়। বন্ধ নেই।
সিলেটকে বলা হয় দু’টি পাতা একটি কুঁড়ির দেশ। প্রতিদিন দেশের নানা প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ ভ্রমণ, ব্যাবসা ও অন্যান্য কাজে সিলেটে যাতায়াত করেন। এঁদের বড় একটি অংশ ভ্রমণ করেন ট্রেনে। তাই অসংখ্য মানুষ জানতে চান ঢাকা টু সিলেট ট্রেনের সময়সূচি ও ভাড়া সম্পর্কে।
এই প্রবন্ধে রয়েছে ঢাকা থেকে সিলেটের দূরত্ব, ঢাকা টু সিলেট ট্রেনের তালিকা, সময়সূচি ও ভাড়া, ঢাকা টু সিলেট ট্রেনের বিরতিস্থলগুলো এবং কীভাবে অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটতে হয় সে সম্পর্কে নির্দেশিকা। সেই সঙ্গে ছবিসহ সিলেটের দর্শনীয় স্থান সমূহের গুরুত্বপূর্ণ কিছু লিংক।
এই লেখা কিছুটা দীর্ঘ হতে পারে। তাই তাড়াহুড়ো থাকলে আপনি যেন দ্রুত ও সরাসরি ঢাকা টু সিলেট ট্রেনের সময়সূচি ও টিকিটের দাম একনজরে দেখে নিতে পারেন, নিচে একটি বিষয়সূচি দেয়া হলো। এর যে-কোনোটিতে ক্লিক করে অন্যান্য আলোচনা এড়িয়ে গিয়ে আপনি সরাসরি চলে যেতে পারেন ট্রেনের সময়সূচি ও টিকেট মূল্যের অনুচ্ছেদে।
বিষয়সূচি
ঢাকা থেকে সিলেটের রেল দূরত্ব
বাংলাদেশ রেলওয়ের হিসেব অনুযায়ী রেলপথে ঢাকা থেকে সিলেটের দূরত্ব হলো ৩১৯ কিলোমিটার। অন্যদিকে সড়কপথে ঢাকা থেকে সিলেটের দূরত্ব হলো ২৪৩ কিলোমিটার, যেমনটি বলছে বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন।
আন্তঃনগর ট্রেনে ঢাকা থেকে সিলেট যেতে সময় লাগে ৭ ঘন্টা। অন্যদিকে সড়কপথে এনা, শ্যামলী বা হানিফ পরিবহনের বাসে সিলেট পৌঁছাতে গড়ে সাড়ে ৬ ঘণ্টা সময় লাগে।
আপনি যদি বাসে ভ্রমণ করতে চান তাহলে নিচের প্রবন্ধটি দেখুন:
ঢাকা টু সিলেট ট্রেনের তালিকা
বর্তমানে ঢাকা টু সিলেট রেলপথে ৪টি আন্তঃনগর ট্রেন ও ১টি মেইল ট্রেন চলাচল করছে। সেগুলো হলো:
১. পারাবত এক্সপ্রেস:
পারাবত এক্সপ্রেস (ট্রেন কোড ৬০৯/৬১০) বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি দ্রুতগামী বিলাসবহুল আন্তঃনগর ট্রেন, যা ঢাকা এবং সিলেটের মধ্যে চলাচল করে। ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ট্রেনটি সিলেটের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। পারাবত এক্সপ্রেস প্রথম যাত্রা শুরু করেছিল ১৯৮৬ সালে।
পারাবত এক্সপ্রেস বাংলাদেশ রেলওয়ে নেটওয়ার্কের ঢাকা টু সিলেট রুটের একটি জনপ্রিয় আন্তঃনগর ট্রেন। পারাবতের একটি বড় বৈশিষ্ট্য হলো এটি অন্যান্য আন্তঃনগর ট্রেনগুলির তুলনায় কম বিরতি নেয়, সে কারণে পারাবত এক্সপ্রেসের যাত্রীরা পথিমধ্যে ঝুটঝামেলা পোহানো ছাড়াই তাঁদের ট্রেনযাত্রা উপভোগ করতে পারেন।
সময়সূচি: পারাবত এক্সপ্রেস ভোর ৬টা ২০ মিনিটে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে রওনা হয়ে সিলেট পৌঁছায় দুপুর ১টায়। মঙ্গলবার পারাবতের সাপ্তাহিক বন্ধের দিন।
বিরতিস্থল: ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে সিলেট রেলস্টেশনে পৌঁছাতে পারাবত এক্সপ্রেস নিম্নলিখিত ১০ টি স্টেশনে কয়েক করে বিরতি নেয়: ঢাকা বিমানবন্দর রেলস্টেশন, ভৈরব বাজার জংশন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, আজমপুর নওয়াপাড়া (হবিগঞ্জ), শায়েস্তাগঞ্জ জংশন, শ্রীমঙ্গল, ভানুগাছ, কুলাউড়া জংশন এবং মাইজগাঁও।
২. জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস:
জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস (ট্রেন কোড ৭১৭/৭১৮) বাংলাদেশ রেলওয়ে পরিচালিত একটি দ্রুতগামী আন্তঃনগর ট্রেন, যা ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে সিলেট রেলস্টেশন পর্যন্ত চলাচল করে। এটি বাংলাদেশের অন্যতম বিলাসবহুল ট্রেন। রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের আমলে এ আন্তঃনগর ট্রেনটি প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে তার যাত্রা শুরু করেছিল। এটি দেশে সর্বপ্রথম চালু হওয়া আন্তঃনগর ট্রেনগুলির অন্যতম। জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস উদ্বোধন করা হয়েছিল ১৩ ই মে, ১৯৮৬ সালে।
সময়সূচি: জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসের সময়সূচি হলো, এটি প্রতিদিন ঢাকার কমলাপুর স্টেশন থেকে সকাল সোয়া ১১টায় রওনা হয়ে সিলেটে পৌঁছায় সন্ধ্যে ৭টায়। ঢাকা থেকে সিলেটগামী জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসে কোনও বন্ধের দিন নেই, তবে উল্টোপথে অর্থাৎ সিলেট টু ঢাকা রুটে এটি বৃহস্পতিবার চলে না।
বিরামস্থল: ঢাকা টু সিলেট রুটে জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসের এই ১৪টি বিরামস্থল রয়েছে: ঢাকা বিমানবন্দর রেলস্টেশন, আশুগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, আজমপুর, মুকুন্দপুর, হরশপুর, মনতলা, নোয়াপাড়া (হবিগঞ্জ), শাহজি বাজার, শায়েস্তাগঞ্জ জংশন, শ্রীমঙ্গল, ভানুগাছ, কুলাউড়া জংশন এবং মাইজগাঁও।
৩. উপবন এক্সপ্রেস:
উপবন এক্সপ্রেস (ট্রেন নম্বর ৭৩৯/৭৪০) হলো বাংলাদেশ রেলওয়ে পরিচালিত ঢাকা টু সিলেট রুটের একটি রাত্রিকালীন আন্তঃনগর ট্রেন। উপবন এক্সপ্রেস উদ্বোধন করা হয়েছিল ৪ঠা মে, ১৯৮৮ সালে।
সময়সূচি: উপবন এক্সপ্রেস ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে রাত সাড়ে ৮টায় রওনা হয়ে ভোর ৫টায় সিলেট পৌঁছুয়। উপবন এক্সপ্রেসের সাপ্তাহিক ছুটির দিন বুধবার।
বিরামস্থল: উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি এই ১০টি স্টেশনে থামে: ঢাকা বিমানবন্দর রেলস্টেশন, নরসিংদী (কেবল ৭৩৯), ভৈরব বাজার জংশন, শায়েস্তাগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল, ভানুগাছ, শমসের নগর, কুলাউড়া জংশন, বরমচাল এবং মাইজগাঁও।
৪. কালনী এক্সপ্রেস:
কালনী এক্সপ্রেস (ট্রেন নং ৭৭৩/৭৭৪) হলো ঢাকা টু সিলেট রুটের ৪র্থ আন্তঃনগর ট্রেন, যা ১৫ই মে ২০১২ সালে উদ্বোধন করা হয়েছিল। কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনটি ১২টি বগি নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল, যার মধ্যে একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বগি রয়েছে।
সময়সূচি: কালনী এক্সপ্রেস ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে যায় বিকেল ৩টায় এবং সিলেট পৌঁছুয় রাত সাড়ে ৯টায়। শুক্রবার হলো কালনী এক্সপ্রেসের বন্ধের দিন।
বিরামস্থল: ঢাকা থেকে সিলেট যাওয়ার পথে কালনী এক্সপ্রেস ট্রেন মাঝপথের ৯টি স্টেশনে বিরতি নেয়। স্টেশনগুলি হলো: ঢাকা বিমানবন্দর রেলস্টেশন, নরসিংদী (কেবল ৭৭৪), ভৈরব বাজার জংশন (কেবল ৭৭৪), আজমপুর, শায়েস্তাগঞ্জ জংশন, শ্রীমঙ্গল, শমসেরনগর, কুলাউড়া জংশন এবং মাইজগাঁও।
৫. সুরমা মেইল:
সুরমা মেইল (ট্রেন নম্বর ০৯/১০) হলো বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃক পরিচালিত একটি মেইল ট্রেন। ট্রেনটি ঢাকা থেকে সিলেট যাওয়ার পথে গাজীপুর জেলা, নরসিংদী জেলা, কিশোরগঞ্জ জেলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা, হবিগঞ্জ জেলা ও মৌলভীবাজার জেলাকে সংযুক্ত করেছে।
সময়সূচি: সুরমা মেইল ট্রেন ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে রাত ১০টা ৫০ মিনিটে ছেড়ে যায় এবং সিলেটে পৌঁছুয় পরদিন দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে। এটি সপ্তাহের ৭ দিনই চলে, এর কোনও বন্ধের দিন নেই।
বিরামস্থল: সুরমা মেইল এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে টঙ্গী, নরসিংদী, ভৈরব, আখাউড়া, কুলাউড়া হয়ে সিলেট রেলস্টেশন পর্যন্ত মিটারগেজ লাইনে চলে এবং মধ্যবর্তী প্রায় সব স্টেশনেই থামে। ফলে, প্রারম্ভিক স্টেশন ও গন্তব্য স্টেশনসহ সুরমা মেইল ট্রেনের মোট ৫৮টি বিরামস্থল রয়েছে, যা নিচে দেখানো হলো:
কমলাপুর রেলস্টেশন, তেজগাঁও রেলস্টেশন, বনানী রেলস্টেশন, ঢাকা সেনানিবাস রেলস্টেশন, বিমানবন্দর রেলস্টেশন, টঙ্গী জংশন রেলস্টেশন, পুবাইল রেলস্টেশন, নলছাটা রেলস্টেশন, আরিখোলা রেলস্টেশন, ঘোড়াশাল ফ্ল্যাগ রেলস্টেশন, ঘোড়াশাল রেলস্টেশন, জিনারদী রেলস্টেশন , নরসিংদী রেলস্টেশন, আমিরগঞ্জ রেলস্টেশন, খানবাড়ি রেলস্টেশন, হাঁটুভাঙ্গা রেলস্টেশন, মেথিকান্দা রেলস্টেশন, শ্রীনিধি রেলস্টেশন, দৌলতকান্দি রেলস্টেশন, ভৈরব বাজার জংশন রেলস্টেশন, আশুগঞ্জ রেলস্টেশন, তালশহর রেলস্টেশন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন, পঘাচং রেলস্টেশন , ভাটশালা রেলস্টেশন, আখাউড়া জংশন রেলস্টেশন, আজমপুর রেলস্টেশন, সিঙ্গারবিল রেলস্টেশন, মেরাসানী রেলস্টেশন, মুকুন্দপুর রেলস্টেশন, হরশপুর রেলস্টেশন, কাশিমানগর রেলস্টেশন, মনতলা রেলস্টেশন, শাহপুর রেলস্টেশন, তেলিয়াপাড়া রেলস্টেশন, ইটাখোলা রেলস্টেশন, নোয়াপাড়া রেলস্টেশন, ছাতিয়ান রেলস্টেশন, শাহজি বাজার রেলস্টেশন, সুতং রেলস্টেশন, শায়েস্তাগঞ্জ জংশন রেলস্টেশন, লস্করপুর রেলস্টেশন, সাতিয়াজুরী রেলস্টেশন, রশিদপুর রেলস্টেশন, সাতগাঁও রেলস্টেশন, শ্রীমঙ্গল রেলস্টেশন, ভানুগাছ রেলস্টেশন, শমসের নগর রেলস্টেশন, মনু রেলস্টেশন, টিলাগাঁও রেলস্টেশন, লংলা রেলস্টেশন, কুলাউড়া জংশন রেলস্টেশন, চকাপন রেলস্টেশন, বডরমচাল রেলস্টেশন, ভাটোরা বাজার রেলস্টেশন, মাইজগাঁও রেলস্টেশন, ফেঞ্চুগঞ্জ রেলস্টেশন, মোগলাবাজার রেলস্টেশন এবং সিলেট রেলস্টেশন।
খেয়াল রাখা উচিত যে, সব ট্রেন প্রতিদিন চলে না। কোনো কোনো, বরং অধিকাংশ ট্রেনের রয়েছে সাপ্তাহিক ছুটির দিন। তাই সিলেটের উদ্দেশে বাসা থেকে বেরুবার আগেই ঢাকা টু সিলেট ট্রেনের সময়সূচিটা সতর্কতার সঙ্গে দেখে নিন। যাতে করে আপনার ভ্রমণ বিলম্বিত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়ে না যায়।
বাংলাদেশ রেলওয়ের সর্বশেষ আপডেট অনুসারে আমরা এই সময়সূচি তৈরি করেছি এবং অব্যাহতভাবে কিছুদিন পরপর এর নির্ভুলতা নিরীক্ষা করে দেখছি। তাই আপনি ঢাকা টু সিলেট ট্রেনের এই সময়সূচিকে নির্ভুল ও নির্ভরযোগ্য বলে বিবেচনা করতে পারেন।
ঢাকা টু সিলেট ট্রেন রুটম্যাপ
ঢাকা টু সিলেট রেলপথ বাংলাদেশের অন্যতম দীর্ঘ রেলপথ। ৩১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এ রুটের মাঝেমাঝে অনেক বড়-ছোট সাবস্টেশন বা স্টপেজ রয়েছে। আপনি যদি ঢাকা টু সিলেট ট্রেন রুটের প্রত্যেকটি সাবস্টেশন ও স্টপেজ সম্পর্কে বিশদভাবে জানতে চান, তাহলে নিচের বাটনে ক্লিক করে সংযুক্ত পিডিএফ ফাইলটি ডাউনলোড করে দেখে নিতে পারেন। এতে ঢাকা থেকে সিলেটসহ বাংলাদেশের গোটা রেল নেটওয়ার্কের প্রত্যেকটি স্টেশন-স্টপেজের একটি তালিকা রয়েছে:
তবে যদি আমরা সংক্ষেপে শুধু বড় ও গুরুত্বপূর্ণ সাবস্টেশনগুলির নাম উল্লেখ করতে চাই, তাহলে বলা যায় যে, আপনার প্রারম্ভিক স্টেশন ঢাকার কমলাপুর থেকে আপনার গন্তব্য সিলেট স্টেশন পর্যন্ত মাঝখানে মোট ১৪টি উল্লেখযোগ্য স্থানে আপনাকে বহনকারী ট্রেনটি থামতে পারে। সেই বিরামস্থলগুলি হলো:
ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশন > আশুগঞ্জ > ব্রাহ্মণবাড়িয়া > আজমপুর > মুকুন্দপুর > হরশপুর > মনতলা > নোয়াপাড়া > শাহজী বাজার > শায়েস্তাগঞ্জ > শ্রীমঙ্গল > ভানুগাছ > কুলাউড়া > মাইজগাঁও।
ঢাকা টু সিলেট ট্রেন ভ্রমণকাল
আন্তঃনগর ট্রেনে চড়ে ঢাকা থেকে সিলেট পর্যন্ত এই ৩১৯ কিলোমিটার দূরত্ব পাড়ি দিতে পারাবত এক্সপ্রেস সময় নেবে ৬ ঘণ্টা ৪০ মিনিট, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ৭ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট, উপবন এক্সপ্রেস ৮ ঘণ্টা ৩০ মিনিট এবং কালনী এক্সপ্রেস ট্রেন গন্তব্যে পৌঁছুতে সাড়ে ৬ ঘণ্টা সময় নেবে।
ঢাকা টু সিলেট মেইল ট্রেন সুরমা এক্সপ্রেস ধীরগতিতে চলে, প্রতিটি সাব-স্টেশনে থামে এবং আন্তঃনগর ট্রেনগুলির চেয়ে দীর্ঘ বিরতি নেয়। ফলে, মেইল ট্রেন সুরমা এক্সপ্রেসে ঢাকা থেকে সিলেট যেতে আপনার মোটামুটি ১৩ ঘণ্টা সময় লেগে যাবে। তাই ভারী মালামাল পরিবহনের জন্যে উপযুক্ত হলেও যাত্রী বহনের জন্যে মেইল ট্রেন মোটেই আদর্শ যানবাহন নয়।
ঢাকা টু সিলেট ট্রেন সময়সূচি
আন্তঃনগর ট্রেন
আন্তঃনগর ট্রেনগুলি বাংলাদেশ রেলওয়ে পরিচালিত দ্রুতগামী ট্রেন। নিচের ছকে দেয়া ঢাকা টু সিলেট ট্রেন সময়সূচিতে যে ৪টি আন্তঃনগর ট্রেনের প্রস্থান ও আগমনের সময় দেখানো হয়েছে, সেগুলি হলো: পারাবত এক্সপ্রেস (৭০৯), জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস (৭১৭), উপবন এক্সপ্রেস (৭৩৯) এবং কালনী এক্সপ্রেস (৭৭৩)।
ঢাকা টু সিলেট ট্রেন সময়সূচি ২০২১
ট্রেন | ছাড়ে | পৌঁছায় | বন্ধ |
---|---|---|---|
৭০৯ - পারাবত এক্সপ্রেস | ভোর ০৬:২০ | দুপুর ০১:০০ | মঙ্গল |
৭১৭ - জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস | সকাল ১১:১৫ | সন্ধ্যে ০৭:০০ | নেই |
৭৩৯ - উপবন এক্সপ্রেস | রাত ০৮:৩০ | ভোর ০৫:০০ | বুধ |
৭৭৩ - কালনী এক্সপ্রেস | বিকেল ০৩:০০ | রাত ০৯:৩০ | শুক্র |
মেইল ট্রেন
সুরমা এক্সপ্রেস (০৯) নামে একমাত্র মেইল এক্সপ্রেস ট্রেন চলে ঢাকা টু সিলেট রুটে। নিচে ঢাকা স্টেশন থেকে ট্রেনটির যাত্রার সময় এবং সিলেট স্টেশনে পৌঁছার সময় দেখানো হলো:
ট্রেন | ছাড়ে | পৌঁছায় | বন্ধ |
---|---|---|---|
০৯ - সুরমা এক্সপ্রেস | রাত ১০:৫০ | দুপুর ১২:১০ | নেই |
ঢাকা টু সিলেট ট্রেন টিকেট মূল্য
এখানে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃক নির্ধারিত ও সর্বশেষ পরিমার্জিত ট্রেন টিকেট মূল্যের তালিকা অনুযায়ী উপরিউক্ত ৪টি আন্তঃনগর ট্রেন পারাবত এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, উপবন এক্সপ্রেস ও কালনী এক্সপ্রেস এবং একটি মেইল ট্রেন সুরমা এক্সপ্রেসের জন্যে ঢাকা টু সিলেট ট্রেন টিকেট মূল্য বা ভাড়ার পরিমাণ তুলে ধরছি। আপনি নিশ্চয়ই জানেন যে, বাংলাদেশের ট্রেনগুলিতে বিভিন্ন মানের আসন রয়েছে। টিকেটের মূল্য কত সেটা নির্ভর করে আপনি কোন্ মানের আসন বুক করতে যাচ্ছেন তার ওপর। নিচের সারণিতে সকল শ্রেণীর আসনের ভাড়া বা টিকেট ক্রয়মূল্য দেখানো হলো। উল্লেখ্য, সব ট্রেনে সকল শ্রেণীর আসন লভ্য নয়।
ঢাকা টু সিলেট ট্রেন টিকেট / ভাড়া ২০২১
আসনের শ্রেণী | টিকেট মূল্য |
---|---|
২য় শ্রেণী সাধারণ | ৳ ৮০ |
২য় শ্রেণী মেইল | ৳ ১১০ |
কমিউটার | ৳ ১৩৫ |
সুলভ | ৳ ১৬০ |
শোভন | ৳ ২৬৫ |
শোভন চেয়ার | ৳ ৩২০ |
১ম শ্রেণী চেয়ার | ৳ ৪২৫ |
স্নিগ্ধা | ৳ ৬১০ |
১ম শ্রেণী কেবিন | ৳ ৬৪০ |
এসি সীট | ৳ ৭৩৬ |
এসি কেবিন | ৳ ১০৯৯ |
ঢাকা টু সিলেট ট্রেন টিকেট বুকিং অনলাইন
একজন ভ্রমণপ্রিয় মানুষ হিসেবে এটি সম্ভবত আপনার জন্যে বড় একটি স্বস্তির ব্যাপার যে, এখন থেকে আপনি নিজের ঘরে বসে থেকেই অনলাইনে ঢাকা টু সিলেট ট্রেনের কিংবা অন্য যে-কোনো গন্তব্যের জন্যে ট্রেনের টিকেট কিনে ফেলতে পারবেন। টিকেটের জন্যে আগের মতো আর স্টেশনে সশরীরে হাজির হয়ে বিরক্তি নিয়ে আপনাকে লাইনে দাঁড়াতে হবে না। অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কেনা একদম সহজ ব্যাপার, এজন্যে আপনার ল্যাপটপ বা স্মার্টফোন এবং দু’ মিনিট সময়ই যথেষ্ট।
বাংলাদেশ রেলওয়ের ই-সেবার মাধ্যমে আপনি একসাথে অনলাইনে সর্বোচ্চ ৪টি টিকেট কিনতে পারবেন। টিকেট কালোবাজারি রোধ করবার জন্যে এই সামান্য সীমাবদ্ধতা।
অনলাইনে বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকেট কেনার জন্যে প্রথমে আপনি ই-সেবা ওয়েবসাইটে যান। এখানে আপনার নাম, মোবাইল নম্বর এবং ইমেল ঠিকানা দিয়ে সাইনআপ এবং তারপর লগইন করুন। ছয়টি ঘরযুক্ত একটি ফরম খুলেছে, তাই না? এই ফর্মটির ড্রপডাউন মেনু থেকে কখন এবং কোথা থেকে আপনি যেতে চান, কোন্ মানের কয়টি আসন চান, আপনার সাথে আপনার কোনও সন্তান রয়েছে কিনা তা নির্বাচন করুন, অতঃপর ‘ফাইন্ড’ বোতামটিতে ক্লিক করুন। এবার ই-সেবা ওয়েবসাইটটি আপনাকে আপনার চিহ্নিত তারিখে উপলব্ধ ট্রেনগুলির নাম দেখাবে মনোনীত আসনের টিকিটের মূল্য সহ।
আপনি যদি এই কাজটা ঠিকমতো করে থাকেন তাহলে ‘পারচেজ টিকেট’ বোতামে ক্লিক করুন এবং ক্রেডিট কার্ড বা বিকাশ অথবা অর্থ হস্তান্তরের অন্য কোনো পরিষেবার মাধ্যমে আপনার টিকেটের মূল্য প্রদান করুন। তাহলে আপনার কাঙ্ক্ষিত ট্রেনের টিকেট(গুলি) তাৎক্ষণিকভাবে আপনার ই-মেইলে পৌঁছে যাবে। এবার আপনার ইমেল ইনবক্স থেকে এই ই-টিকেট মুদ্রণ করুন এবং আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের একটি ফটোকপিসহ এটি আপনার ভ্রমণের নির্ধারিত সময়ের ১৫ মিনিট আগে সংশ্লিষ্ট স্টেশনে জমা দিন। স্টেশন মাস্টার তখন আপনাকে আপনার ট্রেন টিকেটের মূল কপি প্রদান করবে।
কীভাবে অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটতে হয়, এখানে আমরা তার প্রক্রিয়াটি সংক্ষেপে বলেছি। আপনি যদি স্পষ্টভাবে কিছু বুঝতে পারছেন বলে মনে না করেন কিংবা অনলাইনে ট্রেনের টিকেট ক্রয়ের বিষয়ে একটি গাইডলাইন সন্ধান করে থাকেন তাহলে এই নিবন্ধটি একবার দেখুন: Bangladesh Railway Ticket Booking Online.
☕ চায়ের দেশে স্বাগত! 🌺
ঢাকা টু সিলেট ট্রেনের সময়সূচি এবং টিকেটের মূল্য সম্পর্কে তথ্য এ পর্যন্তই। ট্রেনে আপনার ফিরতি ভ্রমণের তথ্যের জন্যে দেখুন Sylhet to Dhaka Train Schedule & Ticket Price. আপনার যদি এই ব্যাপারে আরও কিছু জানবার থাকে কিংবা যদি আপনি আপনার নিজের ট্রেন ভ্রমণের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে চান তাহলে দয়া করে নিচে মন্তব্যের ঘরে সেটা লিখে রেখে যান। ইচ্ছে করলে আমাদের সাথে যোগাযোগও করতে পারেন।
সিলেট প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দেশ। এখানে সিলেটের বাছাই করা কিছু দর্শনীয় স্থানের ছবিসহ ভ্রমণ গাইড দেয়া হলো। যে-কোনো একটিতে ক্লিক করলেই পেয়ে যাবেন সেই জায়গা ভ্রমণের প্রয়োজনীয় সব তথ্য-উপাত্ত। আপনার ভ্রমণ আনন্দময় হোক!
Saturday ticket. 1 baby & 2 man
বিলম্বিত উত্তরের জন্যে দুঃখিত। উপরের সময়সূচি যদি খেয়াল করে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই দেখেছেন যে, সিলেটের পাঁচটি ট্রেনের কোনোটাই শনিবারে বন্ধ থাকে না। কাজেই আপনি আপনার সুবিধামতো যে-কোনো ট্রেনে সফর করতে পারেন। আসনশ্রেণী অনুযায়ী টিকেটের দাম এবং অনলাইনে টিকেট বুকিংয়ের তথ্যও এই লেখায় দেয়া আছে। ধন্যবাদ।