নুহাশ পল্লী কোনো প্রাকৃতিক বা প্রত্নতাত্ত্বিক দ্রষ্টব্য নয়—আদতে এটি একটি বাগানবাড়ি, এক শৌখিন লেখকের। সেই লেখকের নাম হুমায়ূন আহমেদ। বাঙলা সাহিত্যের ভাস্করদের ভিড়ে হঠাৎ তাঁর আবির্ভাব এক মিস্ত্রির মতো। রাতারাতি তিনি কুড়োন তুলনারহিত পাঠকপ্রিয়তা। বইয়ের কাটতির সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে পসার, আসে পয়সাও। গাজীপুরের বিশাল শালবনের ভেতরে তিনি ৪০ বিঘে জমি কেনেন। বানান নুহাশ পল্লী।
ওই যে বললাম শখ, সেইটেই। কবিতা লিখতে না পারলেও, কবিদের মতো তিনি বৃষ্টি আর জোছনা পছন্দ করতেন। অদ্ভুতভাবে, আগ্রহ ছিল ভূত-প্রেতেও। তাই নুহাশ পল্লীতে তিনি বাড়ি বানিয়েছেন ‘বৃষ্টিবিলাস’, ‘ভূতবিলাস’, গাছের ডালে ঝুলিয়েছেন জোছনা দেখার ঘর। শেষজীবনে প্রায়শ এখানে তিনি সময় কাটাতেন, গল্প আর নাটক বানাতেন।
আর কী কী আছে নুহাশ পল্লীতে? রসুন, সব বলব। এটা ভূমিকা। ভূমিকায় সব বলে ফেললে গোটা লেখাটা তো আপনি পড়বেনই না। অবশ্য ইতোমধ্যে আপনি যদি নুহাশ পল্লী ঘুরে এসে থাকেন, তাহলে এই লেখা পড়ে কাজ নেই।
বিষয়সূচি
নুহাশ পল্লী কোথায়?
নুহাশ পল্লী ঢাকার কাছেই, গাজীপুর জেলায়। ঢাকা থেকে সম্ভবত ১৫ মাইল উত্তরে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর-চন্দনা চৌরাস্তা থেকে ৭ মাইল দূরে একটি ছোট বাজার আছে, নাম হোতাপাড়া বাজার। সেখান থেকে ৫ মাইল পশ্চিমে পিরুজালি গ্রাম। ওই গ্রামেই পনের বছর আগে হুমায়ূন আহমেদ বানিয়েছিলেন এই নুহাশ পল্লী। জায়গাটা গভীর বনের ভেতরে বলে খুবই নির্জন নিভৃত। লেখালেখির জন্যে চমৎকার জায়গা ছিল। কিন্তু লেখক মারা যাবার পরে জনতা এসে নির্জনতাকে তাড়িয়ে দিয়েছে। এখন ওটা একটা হৈচৈকেন্দ্র—লোকজন রোজ দলবেঁধে আসে পিকনিক করতে!
নুহাশ পল্লীর তটস্থ নির্জনতা
নুহাশ পল্লীতে সবচেয়ে ভালো লাগার ব্যাপার ছিল এর নির্জনতাই, মানে যখন তা ছিল। আপনি শহর থেকে বেড়াতে গেলে এই নির্জনতা আন্দাজ করতেই ভালো লাগবে আপনার। তবে গ্রাম থেকে গেলে নৈব নৈব চ। আমি গ্রাম থেকেই গিয়েছিলাম। দেখলাম কোথাও থেকে একটা স্কুলের ছেলেমেয়েরা এসেছে পিকনিক করতে। এরা একটা জলভরা সিমেন্টের চৌবাচ্চায় ঝাঁপাঝাঁপি করে তুমুল হৈচৈ করছিল। ওদের আনন্দ দেখে আমার চোখ ভিজে উঠল। আহা বেচারারা, হাওর-মাঠ তো দূরে, এদের অনেকে হয়তো উঠোন কাকে বলে সেটাই জানে না। পাহাড়ি নদীতে ঝাঁপাঝাঁপি করে বেড়ে ওঠা আমার হাহাকারের মানে ওরা কখনো বুঝবে না!
যাক গে, শিবের গীত বাদ দিই। নুহাশ পল্লীর ভালো দিকগুলোর কথাই বলি। আরেকটা মস্ত ভালো দিক হলো সবুজ। গোটা বাগানবাড়ি জুড়ে আছে গাছপালা, তার নিচে ঘন ঘাসের সবুজ গালিচা। অনেক রকম গাছই আছে। প্রকৃতির এই সৌন্দর্য ভালো লাগার মতো। এক প্রান্তে বড় এক লিচু গাছের তলে হুমায়ূন আহমেদ শুয়ে আছেন। আজকাল তিনি এখানেই থাকেন। মাটির নিচে, মহানিদ্রায়।
কী কী আছে নুহাশ পল্লীতে?
প্রায় আড়াই শো প্রজাতির ওষধি, ফলজ ও বুনো গাছপালা আছে নুহাশ পল্লীতে। প্রত্যেকটি গাছের গায়ে সাঁটা আছে নামফলক। সবুজ মাঠের মাঝখানে গাছের ডালে বাবুই পাখির বাসার মতো ঝোলানো ঘরটা নজর কাড়ে। নুহাশ পল্লীর পুবদিকে আছে অনেকগুলি পাম গাছ। আর ওখানে গেলে সবচেয়ে বেশি করে চোখে পড়বে ‘বৃষ্টিবিলাস’ নামের টিনের ঘরটা। স্রেফ বৃষ্টির শব্দ শুনবার জন্যে কেউ এমন বাড়ি বানায়, সেটা নুহাশ পল্লীতে না গেলে বোঝা যাবে না। আরেকটা জিনিস ‘লীলাবতী দিঘি’। দিঘির চারপাশ ঘিরে গাছপালা। এখানে ওখানে প্রাগৈতিহাসিক প্রস্তরমূর্তি। দিঘিতে শানবাঁধানো ঘাট। মাঝখানে একটি ছোট দ্বীপ। সেই দ্বীপে দাঁড়িয়ে কয়েকটা নারকেল গাছ। পারাপারের জন্যে বানানো হয়েছে কাঠের লম্বা সেতু। সবই নিখুঁত পরিকল্পনার ফল।
আছে আরও কিছু দ্রষ্টব্য। যেমন হুমায়ূনের আবক্ষ মূর্তি, মর্মরপাথরের সমাধি, পদ্ম পুকুর, একটা পুকুরে আবার অর্ধমগ্ন মৎস্যকন্যা, আঁকাবাঁকা নকশার সুইমিং পুল, একটি ঘরের পুরো মেঝে জুড়ে দাবা খেলার বোর্ড, চা ঘর, এমনি আরও অনেককিছু। বৃষ্টিবিলাস ও ভূতবিলাস ছাড়াও আরেকটি বাংলো আছে নুহাশ পল্লীতে, ওটার কী নাম খেয়াল করি নি।
নুহাশ পল্লীতে ঢুকেই প্রথম চোখে পড়ে হুমায়ূন আহমেদের দ্বিতীয় স্ত্রী শাওন আর ছেলে নিষাদের ভাস্কর্য। কিন্তু হুমায়ূনের বড় ছেলে নুহাশ, যার নামে এ পল্লীর নাম, তার বা তার জননী গুলতেকিনের কোনো ভাস্কর্য নুহাশ পল্লীর কোথাও রাখা হয় নি।
নুহাশ পল্লীতে দেখার জিনিস
ক্রম | যা দেখবেন |
---|---|
০১ | বৃষ্টি বিলাস: বৃষ্টির ঝমঝম শব্দ উপভোগ করতে বানানো একটি টিনের বাংলো। |
০২ | সমাধি: নুহাশ পল্লীর লিচু বাগানে হুমায়ূন আহমেদের কাচঘেরা শ্বেতপাথরের সমাধি। |
০৩ | মা-শিশুর ভাস্কর্য: মা-ছেলে হাত ধরাধরি করে দাঁড়িয়ে। নুহাশ পল্লীতে ঢুকেই সাদা এ ভাস্কর্যটি চোখে পড়ে। |
০৪ | ভেষজ উদ্যান: তিন শতাধিক প্রজাতির দেশী-বিদেশী ওষধি গাছের একটি বাগান, যা হুমায়ূন নিজ হাতে লাগিয়েছেন। |
০৫ | হোয়াইট হাউস: নুহাশ পল্লীতে হুমায়ূন আহমেদের মূল বসতঘর। |
০৬ | সুইমিং পুল: নীল টালির দু'টি সুইমিং পুল আছে। একটি বড়দের, হৃৎপিণ্ডের আকারের। অন্যটি ছোটদের। পর্যটকেরা এগুলো ব্যবহার করতে পারেন। |
০৭ | খুলির কঙ্কাল: মানুষের মাথার খুলির বিশাল এক কঙ্কাল বসানো হয়েছে সুইমিং পুলের পারে। এর হা-করা মুখ বেরিয়ে এসেছে একটি ঝর্ণাধারা। |
০৮ | একটি ম্যুরাল: হুমায়ূন আহমেদের একটি বিশাল প্রস্তরিত প্রতিকৃতি স্থাপন করা হয়েছে তাঁর হোয়াইট হাউজের সামনে। |
০৯ | লীলাবতী ভাস্কর্য: এক কিশোরী কদমগাছের নিচে বেঞ্চে উপুড় হয়ে শুয়ে বই পড়ছে। এটি তাঁর মৃত মেয়ে লীলাবতীর একটি কাল্পনিক ভাস্কর্য। |
১০ | পাহাড়ে চীনা দৈত্য: দিঘি লীলাবতীর তীরে বানানো হয়েছে কৃত্রিম পাহাড়। সেই পাহাড় থেকে নেমে এসেছে ঝর্ণা। আর পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে বিরাটকায় এক চীনা দৈত্য। |
কীভাবে যাবেন নুহাশ পল্লীতে?
নুহাশ পল্লী গাজীপুরে। তাই আপনাকে ঢাকা থেকে, অথবা ঢাকা হয়ে, প্রথমে যেতে হবে গাজীপুর। গাজীপুরের হোতাপাড়া বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে নামবেন। পুরান ঢাকা থেকে ঢাকা পরিবহন, প্রভাতী, বনশ্রী ইত্যাদি বেশ কয়েকটি বাস এই রুটে চলাচল করে। মহাখালি থেকে ময়মনসিংহ-নেত্রকোনাগামী যে-কোনো বাসে চড়েই পৌঁছে যেতে পারেন হোতাপাড়ায়। কোন্ বাসে গেলে কম সময়ে পৌঁছুতে পারবেন? হ্যাঁ, সম্রাট লাইন, রাজদূত, ডাউন টাউন বা ঢাকা পরিবহনের যে-কোনো বাস। এসব পরিবহনের বাসগুলো গাজীপুর চৌরাস্তায় যাত্রী নামিয়ে দ্রুত এগিয়ে যায় ৮ মাইল দূরবর্তী হোতাপাড়ার দিকে। অন্যদিকে ময়মসিংহগামী বাস এবং প্রভাতী ও বনশ্রী পরিবহনের বাসগুলো গাজীপুর চৌরাস্তায় বেশ খানিকক্ষণ দেরি করে।
ঢাকা থেকে হোতাপাড়া পর্যন্ত বাসভাড়া স্থানভেদে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। হোতাপাড়া বাসস্ট্যান্ডে নেমে টেম্পো, সিএনজি অটোরিকশা বা ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে পৌঁছে যাবেন নুহাশ পল্লীতে। টেম্পোর ভাড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা, রিকশা নেবে ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং সিএনজি রিজার্ভ নিয়ে গেলে ভাড়া পড়বে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা। হোতাপাড়া থেকে নুহাশ পল্লী ৫ মাইল দূরে, পৌঁছুতে মিনিট পনের সময় লাগবে।
এক চক্কর ঘুরে আসুন গাজীপুর সাফারি পার্ক
গাজীপুর সাফারি পার্ক নুহাশ পল্লী থেকে মাত্র ৬ মাইল দূরে। আনুষ্ঠানিক নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক হলেও, লোকে গাজীপুর সাফারি পার্ক নামেই চেনে। তো, নুহাশ পল্লী দেখা শেষে বেলা থাকলে এক চক্কর ঘুরে আসুন সাফারি পার্ক থেকে। নুহাশ পল্লী থেকে পিরুজালি-হোতাপাড়া-বাবুর চালা রোড ধরে সাফারি পার্কে যেতে বড়জোর আধা ঘণ্টা লাগবে। ৩,৮১০ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এই পার্কে শত শত প্রজাতির দেশী-বিদেশী জীবজন্তু আছে। এখানে আপনি স্বাধীনভাবে চরে বেড়ানো সিংহ-বাঘ-ভালুকের মাঝখান দিয়ে জিপে চড়ে ঘুরে বেড়িয়ে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন। গাজীপুর সাফারি পার্কের বিস্তারিত ভ্রমণ-তথ্য জানতে ক্লিক করুন:
নুহাশ পল্লী পরিদর্শনের সময়সূচি
নুহাশ পল্লী সারা বছরই খোলা। কোনও সাপ্তাহিক বন্ধটন্ধ নেই। পর্যটকদের জন্যে এটি খোলা থাকে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। তবে বিশেষ অনুরোধে এটি খোলা রাখা হয় মাগরিবের আযান পর্যন্ত।
এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত নুহাশ পল্লী খোলা থাকে সকল দর্শনার্থীর জন্যে। বাকি চার মাস অর্থাৎ ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে প্রধানত পিকনিকের জন্যে ভাড়া দেওয়া হয় নুহাশ পল্লী। প্রাতিষ্ঠানিক পিকনিক চলমান থাকলে সাধারণত বাইরের লোকদের ঢুকতে দেওয়া হয় না।
নুহাশ পল্লীতে ঢুকতে টাকা লাগে
জ্বি, মোটামুটি ভালো দক্ষিণা দিলে তবেই আপনি ঢুকতে পারবেন নুহাশ পল্লীতে। এটা হলো দু’ শো টাকা। অবশ্য দশ বছরের কম বয়েসি শিশু ও গাড়িচালক এর বাইরে। গাড়ি পার্ক করতেও টাকা লাগে না। হুমায়ূনের কবর জিয়ারতও ফ্রি। অর্থাৎ কবর জিয়ারত করলে আপনাকে কেউ টাকা দেবে না, আপনিও দেবেন না কাউকে। কিন্তু হুমায়ূনের করব জিয়ারতের নাম করে বিনে পয়সায় দেখে আসবেন নুহাশ পল্লী, তা হবে না। কেননা কবর জিয়ারতে ঢোকার গেট আলাদা, ওদিকে ঢুকলে কেবল কবরই দেখবেন, আর কিছু নয়।
হুমায়ূন বেঁচে থাকতে নুহাশ পল্লী ছিল শ্যুটিং স্পট, সেটি এখন মূলত পিকনিক স্পট। ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত এটি মূলত পিকনিকের জন্যেই ভাড়া দেওয়া হয়। পিকনিকের জন্যে প্রতিদিন একটি দলে ৩০০ জন পর্যন্ত ঢুকতে পারেন। সরকারি ছুটির দিনে পিকনিকের জন্যে নুহাশ পল্লীর ভাড়া ৬০ হাজার টাকা, অন্যান্য দিনে ৫০ হাজার। আর স্কুলের ক্ষেত্রে সরকারি ছুটির দিনে পিকনিকের জন্যে নুহাশ পল্লীর ভাড়া ৫০ হাজার টাকা, অন্যান্য দিনে ৪০ হাজার।
তবে বছরে দু’ দিন নুহাশ পল্লীতে ঢোকা যায় বিনে পয়সায়। ওই দু’ দিন হলো হুমায়ূনের জন্মদিন ১৩ই নভেম্বর ও মৃত্যুদিন ১৯শে জুলাই।
থাকার ব্যবস্থা
নুহাশ পল্লীতে রাতে থাকার ব্যবস্থা নেই। দিনের বেলায় ভূতবিলাস বাংলোয় থাকতে পারেন কিছুক্ষণ, কিন্তু সেটাও বেশ খরুচে ব্যাপার, গুনতে হবে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা। আসলে থাকার দরকার পড়ে না। ঢাকা থেকে বেড়াতে গিয়ে দিনে দিনেই ফিরে আসা যায়। আপনি যদি ঢাকার বাইরের কোথাও থেকে যান, তাহলে দেখাটেখা সেরে গাজীপুর চৌরাস্তার কোনও হোটেলে থাকতে পারেন।
নুহাশ পল্লীর আশেপাশে বেড়ানোর জায়গা
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের কথা আগেই বলেছি। এছাড়াও আরো অনেকগুলি পর্যটন এলাকা আছে গাজীপুরে।
শ্রীপুর উপজেলার মাওনায় আছে সীগাল রিসোর্ট ও পিকনিক স্পট। সেখানে ৪২ বিঘা জমিতে আছে নানারকম গাছপালা। রাত্রিযাপনের জন্যে আছে ১৮টি কটেজ, আছে কিডস জোন, ছোট চিড়িয়াখানা, বড় সম্মেলন কক্ষ, রেস্তোরাঁ, হ্রদ ও খেলার মাঠ।
ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান তো সারাদেশে বিখ্যাত। এটা পড়েছে গাজীপুরের জয়দেবপুরে। ৫০২২ হেক্টর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত ছায়াঘন এই উদ্যান ১৯৮২ সালে জাতীয় উদ্যানের স্বীকৃতি লাভ করে। এই উদ্যান শত শত প্রজাতির গাছপালা ও বন্য জীবজন্তুর অভয়ারণ্য।
ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের কাছেই রয়েছে ভাওয়াল রাজার বিরাট শ্মশান ও রাজপরিবারের মৃতদের নামফলকসমেত সমাধিসৌধ। আর আছে মুঘল স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত ছয় স্তম্ভবিশিষ্ট এক প্রাচীন শিবমন্দির।
দেখে আসতে পারেন গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বলিয়াদী ইউনিয়নে চার শো বছরের পুরনো প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন বলিয়াদী জমিদার বাড়ী। কথিত আছে যে, ১৬১২ ঈসায়ী সনে মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের ফরমান বলে প্রতিষ্ঠিত এই বলিয়াদী এস্টেটের প্রথম কর্ণধার ছিলেন ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর সিদ্দিকী (রা.)-এর উত্তরপুরুষ কুতুব উদ্দিন সিদ্দিকীর পুত্র সাদ উদ্দিন সিদ্দিকী।
আরেকটি শতাব্দীপ্রাচীন জমিদারবাড়ি আছে এই কালিয়াকৈরেরই শ্রীফলতলী গ্রামে, নাম শ্রীফলতলী জমিদার বাড়ি।
গাজীপুরের মাওনার চকপাড়ায় রয়েছে ড্রিম স্কয়ার রিসোর্ট। ১২০ বিঘা জমিতে প্রতিষ্ঠিত ছায়াঘেরা এই রিসোর্টে আছে দেশী-বিদেশী গাছপালায় ছাওয়া পার্ক, নানা জীবজন্তুর ভাস্কর্য, গেস্ট হাউজ, ওয়াচ টাওয়ার, খেলার মাঠ, ঘরোয়া কিছু খেলার ব্যবস্থা, সুইমিংপুল, শরীরচর্চাকেন্দ্র, রাইড, কুঁড়েঘরের আদলে বানানো কফি শপ ও আধুনিক রেস্তোরাঁ।
একডালা দুর্গের নাম হয়তো আপনি শুনে থাকবেন। গাজীপুরের কাপাসিয়া থেকে প্রায় ছয় মাইল দূরে শীতলক্ষ্যা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পশ্চিম তীরে ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ২ কিলোমিটার প্রস্থ বিশিষ্ট এই দুর্গ নির্মিত হয়েছিল আনুমানিক ৬০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে।
গুগল ম্যাপে নুহাশ পল্লী
গুগল ম্যাপে নুহাশ পল্লী দেখতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন: